কবুতর অনেক কিছুর জন্য পরিচিত ও বিশ্ববিখ্যাত এবং বিভিন্ন কারণের জন্য এর চাহিদা রয়েছে। কবুতরের আকার, রং ও বিক্রয়ের জন্য কবুতরের পোষা পাখি হিসাবেও বেশ দেখা যায়। কবুতরের যত্ন এর সাথে সাথে এর কিছু ব্যাপারে আমরা সহজেই অনেক সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকতে পারি। কবুতরের পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন ছাড়াও আরও একটি গুরুত্তপূর্ণ ব্যাপারে যা আমরা অনেকেই খেয়াল রাখি না, সেটা কি? সেটা হল আপনার কবুতরের গোসল করান। যদিও ব্যাপারটা খুবই সাধারন কিন্তু এর গুরুত্ব অনেক, প্রাথমিক ভাবে বলা যায় যে আপনার পায়রার দেখাশুনা ছাড়াও অনেক অনাখাঙ্খিত রোগ বালাই থাকেও নিরাপদ থাকবে আপনার কবুতর।
পায়রার মালিক তাঁর কবুতর কিভাবে গোসল/ স্নান দিবে তাঁর একটা সঠিক নির্দশনা দেওয়া হলঃ
১। আপনি প্রায় হয়তো খেয়া করবেন যে আপনার কবুতরটি তাঁর পানির পাত্র টিতে স্নান করার চেষ্টা করছে এটাকে একটু ভালভাবে কিভাবে করান যায় তাই আলোচনা করবো।
- যেমন একটা মাপসই ক্লিন ট্রে ক্রয় বা বানাতে হবে, সেটা প্লাস্টিক অথবা টিনের হতে পারে।
- ট্রে টি কমপক্ষে বারো ইঞ্চি জুড়ে অধিক সাত ইঞ্চি গভীর ট্রে নির্বাচন করুন, পরিষ্কার জল তিন বা চার ইঞ্চি ট্রে পূরণ করুন।
- ছোট পায়রার প্রজাতির জন্য অগভীর গভীরতা ব্যবহার করুন, দৈনিক মল মিশ্রিত হলে সঙ্গে সঙ্গে নোংরা জল পরিবর্তন করুন।
- জলের তাপমাত্রার ব্যাপারটা মনে রাখবেন, মাত্রাতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা জল ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে ঠান্ডার সময় হাল্কা গরম পানি দেয়া যেতে পারে।
২। আগে পায়রার গোসলের পানি অফার করুন, ধাপ এক এ উল্লিখিত হিসাবে একই কৌশল ব্যবহার করুন। আপনি ধীরে ধীরে আপনার পায়রাকে অভ্যস্ত করার জন্য পানি দিতে এবং আপনি এটি তাদের স্নান করার আগে তাদের সেটি প্রদর্শন করুন । সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ দিন স্নান করান যেতে পারে। তবে যারা কোন প্রতিযোগিতাই অংশ নিতে চাই তারা অবশ্যই পাঁচ দিনের শো তারিখের আগে স্নান করান উচিৎ। এই জল পালকের তেল রং মুছে ফেলা এবং পায়রার পালকের উজজলতা ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
৩। স্পট-ক্লিনার ব্যবহার করুন। একটি হালকা শ্যাম্পু (একটি ঔষধমিশ্রিত ছাড়া শ্যাম্পু ভাল কাজ করে) ব্যবহার করুন। গরম পানি এবং শ্যাম্পু অল্প পরিমাণ মিশ্রিত করে একটি কাগজ গামছা বা নরম কাপড় নিন। শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে পায়রার মুখ এড়িয়ে চলুন বা বাচিয়ে রাখুন, জল অথবা একটি ভিজা পরিষ্কার কাপড় একটি স্প্রে দিয়ে পরিষ্কার এলাকা পাখলান। কিছুক্ষণ পর পাখি স্বাভাবিক ভাবেই শুকিয়ে যাবে।
যদি কবুতরের শরীরে পোকা/উকুন/মাইট ইত্যাদি হয় তাহলে, নিম পাতা সিদ্ধ করে পানির তাপমাত্রা নরমাল করে স্নান এর জন্য দিতে পারেন, ফিটকারি/পটাস/ডেটল মিক্স পানিও এক্ষেত্রে ভাল কাজ করে। অথবা English shampoo, দিয়া স্নান করাতে পারেন এটা খুব ভাল কাজ করে। তবে শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানোর পর ভাল ভাবে সাধারন পানি দিয়ে পরিস্কার করে নিবেন। ঠাণ্ডার সময় তোয়ালে অথবা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিতে পারেন। অসুস্থ কবুতরের পা গরম পানির সাথে একটু অ্যান্টিসেপ্টিক মিক্স করে ধুয়ে দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। সুস্থ কবুতর কে যদি স্নান করান সম্ভব না হলে অন্তত পা ধুয়া এবং নরমাল পানি দিয়ে স্প্রে করা উচিৎ।
স্নান এর উপকারিতাঃ
- স্নান কবুতরের ময়লা দূর করার সাথে সাথে এর শরীরে লেগে থাকা রোগ জীবাণু/ ফাঙ্গাস/ ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি ধুয়ে যায়।
- স্নান কবুতরের শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করে।
- স্নান কবুতরের শরিরকে চকচকে রাখে।
- ডিমে তা দেয়া কবুতরের স্নান অতি জরুরি, এতে ডিমের আদ্রতা বজাই থাকে ও ডিম ফুটতে সাহায্য করে।
- স্নান দেবার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কানে পানি না যায়। (যখন নিজেস্নান দিবেন)।
- স্নান স্ট্রেস মুক্ত রাখবে আপনার কবুতরদের।
- কবুতর দের স্নান দিবার পর রোদে কিছুক্ষন রাখার ব্যাবস্থা করা, আর সম্ভভ হলে রোদের মধ্যেই স্নান এর বাবস্থা করা।
সতর্কতাঃ
শ্যাম্পু দিয়ে কখনও স্প্রে করবেন না।
অ্যান্টি জীবাণু মুক্ত ঔষধ দিয়ে গোসল দিবেন না।
অতিরিক্ত কোন ঔষধ যার সম্পর্কে আপনার জ্ঞান নেই সেগুল দিয়ে গোসল দিবেন না।
ঠাণ্ডার সময় কুসুম গরম পানি ব্যাবহার করতে পারেন। বেশি ঠাণ্ডার সময় গোসল না করানোয় ভাল।