আমার পছন্দের কবুতর ।

আমি সব ধরনের কবুতরই পছন্দ করি তাদের নিরিহ স্বভাবের কারনে। কিন্তু তাদের মধ্যে বিশেষ কিছু জাত আছে যে গুলো আমার পছন্দের কবুতর আর এগুলো পালতেও সুবিধা। তাদের মধ্যে প্রথমে লক্ষ্যার নাম আগে আসে, এর পর সিরাজি, বিউটি হমার, হমার স্ত্রেসার ইত্যাদি। পোর্টার আমার পছন্দের তালিকাই ছিল, কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে আজ এই কবুতরের জাত একেবারেই হযবরল।

বিউটি হমার

বিউটি হমার

পোর্টার

পোর্টার

এক সময় আমি বাচ্চা পোর্টার ২৫ হাজার টাকাতেও কিনতে পারি নাই, কারন সেই সময় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিল এর দাম এবং সেই সাইজ ও ছিল একেকটা দেখার মত। কিন্তু দিন যতই গেল, দেখলাম এর জাত একবারই তলানিতে এসে ঠেকেছে। কারন কি? কিছুই না … আমরা একটু বেশি বুঝে ফেলেছিলাম, বেশি পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়ে… আর কিছু বিক্রেতারা কারসাজিতে এর জাত এর কোন জুত নাই। আজকাল ৫-১০ হাজার টাকায় পোর্টার পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে হেনা পোর্টার যেখানে ৭০-৮০ হাজার ছিল, সেদিন হাটে একজন বিক্রি করছেন ১২ হাজার টাকা দিয়ে। আর তাই যাদের কাছে ভাল জাত আছে তারা আর ব্রীড করাচ্ছেন না। কেন করবেন…তাদের ত আর কবুতর বিক্রি করে খেতে হয় না। কিন্তু এর ফলাফল কি…?

সার্টইন

সার্টইন

পছন্দের তালিকায় সার্টইন ব্রিডিং জোড়া ৪ থেকে ৫ হাজার ছিল, কিন্তু আজ বাচ্চা জোড়া বিক্রি হচ্ছে, ১৪ থেকে ১৫ হাজার। আসলেই কি এর এরকম দাম হওয়া উচিৎ? তাহলে এত দাম হবার কারন কি? তবে কি এখানেও শেয়ার বাজারের মত কোন চক্র কাজ করছে ? যাদের মুল উদ্দেশ্য টাকা বানানো ভাল জাতপাতের কোন খেয়াল তারা করে না, কি যাই আসে জাত ভাল হল না খারাপ হলে টা দেখে, পকেট ভরলেই ত হল! আর তাই ভাল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা এই ক্ষেত্রে সফল হচ্ছি না, এখনও নিয়মিত বাংলাদেশের বাইরে কবুতর আনা হচ্ছে। আর আমরা সবাই তাতে ঝাপিয়ে পড়ছি অথচ আমরা জানিই না যে বাইরে থেকে আনা ব্রীড থেকে ভাল বাচ্চা নিতে হলে কমপক্ষে ৩ প্রজন্ম অপেক্ষা করতে হয়, যদিও বাতিক্রম হয় না যে তা না। আমরা যদি আর কিছু জাতের দিকে নজর দিই তাহলে খেয়াল করব যে, সেগুলোর অবস্থাও সেই সার্টইন এর মতই, যা তার দাম না তার থেকেও বেশি দামের বাজার তৈরি করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে
জ্যাকবিন

জ্যাকবিন

FAV PGN 5

বুখারা

কিং

কিং

অন্যতম । হইত অনেকেই এর পেছনে যুক্তি বা কারন খুজবেন। কিন্তু যত কারন থাকুক না কেন ক্রেতা যদি না থাকে তাহলে লাভ কি? অনেক বড় বড় ব্রিডাররা আছেন যারা হাটে কম দামে তাদের কবুতর বিক্রি করতে পছন্দ করেন কিন্তু অনলাইনে কবুতর বিক্রি করেন না। তাদের ভিসন হল, যে নেটে যদি কম দামে বিক্রি করা হয় তাহলে বাজার নষ্ট হয়ে যাবে, আরে ভাই বাজার ত আগেই থেকেই এই রকম নতুন করে আর কি করার আছে। এখন শুধু এই খাতটি ধুকে ধুকে বেঁচে থাকার মত অবস্থা। বাজারের এই অবস্থা দেখে অনেকেই নতুন কবুতর কিনতে ভয় পান, আর এতে করে নতুন ক্রেতা আর তৈরি হচ্ছে না। আমার পরিচিত বেশ কিছুজন কবুতর পালা থেকে সরে এসেছেন অনেক দুঃখে কষ্টে। আর যারা আছেন তারা ঢাকার বাইরে থেকে কবুতর কিনেন। যা হাওয়া উচিৎ ছিল না।

সুতরাং সবার কাছে অনুরধ থাকবে যে এই খাত নিয়ে একটু চিন্তা করুন, তা না হলে সামনে অশনি বিপদসংকেত অপেক্ষা করছে।

লিখেছেন : সোহেল রাবি ভাই