বর্ষাকালীন সময়ে শীতের মতই একটু বেশী খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার কবুতরের খাদ্য পরিমিত তৈল বীজ যুক্ত থাকে। যেমনঃ বাজরা , তিসি, সরিসা, কুসুম বিচি, সূর্যমুখী বিচি ইত্যাদি। খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার খামার শুকনো থাকে, যদিও এই বর্ষায় এটা খুবই কঠিন একটা কাজ, আর সম্ভব হলে ছোট এক টুকরা কাপড়, পেপার, বা চট দিতে পারেন।
নিয়মিত ক্যালসিয়াম দিতে হবে, E+D ভিটামিন যোগ করে, কারন ভিটামিন ই যোগ না করলে ক্যালসিয়াম বেশি মাত্রাই শোষিত হবে না কবুতরের শরীরে।(মাসে ৩/৪ দিন, তবে যদি গরম বেড়ে যাই তবে এর মাত্রা কমিয়ে দিবেন।)। তবে খামার সব চময় ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করবেন। কারন ঠাণ্ডা থেকে গরমেই সমস্যা বেশী কবুতরের হয়।
আমরা উপরের বিষয় গুলো যদি পর্যালোচনা করি তাহলে, তিনটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়ঃ
প্রতিরোধঃ প্রতিরোধের জন্য অনেক আগেই কিছু প্রাকৃতিক কবুতরের খাদ্য নিয়ে অনেক বার আলোচনা করা হয়েছে।
ক) কবুতর কে সপ্তাহে/১৫ দিনে/মাসে অন্তত ১ দিন কিছু সময়ের জন্য উপবাস রাখা। এতে কবুতরের কর্প এ জমে থাকা সঞ্চিত খাদ্য হজম হয় ফলে বিভিন্ন রোগ থেকে বেচে থাকে।
খ) আমি একটি কবুতরের খাদ্য তালিকা দিয়েছিলাম সেখানে কাল জিরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। আপনি যদি মাঝে মাঝে কালজিরা+মেথি+মউরি+জাউন এই উপাদানের মিক্স করে (৪০%+৩০%+১৫%+১৫%) খেতে দেন আপনার কবুতর কে তাহলে দেখবেন আপনার খামার অনেক অনাখাঙ্কিত রোগ থেকে মুক্ত থাকবে।
গ) এছাড়াও মধু/রসুন/লেবুর রস, কাঁচা হলুদ, অ্যাঁলভিরা এগুলো আপনার কবুতর কে সজিব রাখতে সাহায্য করবে।
ঘ) আপনার খামারে রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে অন্যতম উপাদান হল, খাদ্য পরিস্কার বা নিয়মিত ফাঙ্গাস মুক্ত বা স্যাঁতসেঁতে মুক্ত রাখা। খাবারে ফাঙ্গাস সব ঋতুতেই কমবেশি পরে এই আপনি যদি আপনার খাবারের এই ফাঙ্গাস এর ব্যাপারে খেয়াল রাখেন বা খাবার পরিস্কার এর ব্যাপারে খেয়াল রাখেন তাহলে আশা করা যায় যে আপনার খামার ৮০% রোগ মুক্ত থাকবে কোন প্রকার ঔষধ প্রয়োগ ছাড়াই। আর এই লক্ষে আপনাকে খাবার রোদে দিতে হবে মাঝে মাঝে বা আগুনে হালকা গরম করে নিতে পারেন।
ঙ) ৪৫ দিন পর পর কৃমির ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। তবে অসুস্থ ও বাচ্চা যেগুলোর আছে সেগুলো কে বাদে বা যেগুলো ১-২ দিনের মধ্যে ডিম দিতে পারে এমন বা যে সমস্থ কবুতরের ৭ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটবে বা অসুস্থ থেকে কেবল ভাল হয়েছে এমন কবুতর কে অনুগ্রহ করে দিবেন না।
চ) আমাদের দেশে অধিকাংশ খামারি তথাকথিত হাঁস মুরগীর ভ্যাকসিন দিবার ব্যাপারে খামারিরা অস্থির থাকেন এবং দুঃখ জনক হলেও সত্য যে অনেকেরই ধারনা এই ভ্যাকসিন না দিলে না জানি কি হয়ে যাবে, নতুন খামারিরে দের দোষ দিব না কারন এই ভ্যাকসিনের ভ্রান্ত ধারনা অনেক বড় ও পুরাতন খামারি দের মধ্যেও আছে। ভ্যাকসিন দিতে আমি মানা করব না তবে অনুরোধ করব যেন আমাদের দেশের মুরগির ভ্যাকসিন না দিয়ে কবুতরের জন্য তৈরি ভ্যাকসিন দিবেন। তা না হলে হিতে বিপরীত হবে।
ছ) আপনার কবুতরের খামার পরিস্কার পরিছন্ন রাখারা চেষ্টা করবেন, আর এই লক্ষে আপনার খামারকে প্রতিদিন বা একদিন পরপর অন্তত ২-৩ দিন পর পর তাদের বিষ্ঠা বা মল পরিস্কার করা উচিৎ। কারন কবুতরের রোগের অন্যতম আরেকটি উপাদান হল এই মল। এগুলো শুকিয়ে ধুলাই পরিনত হয় ফলে নানা ধরনের রোগ জীবাণু ছড়ায়। আর পরিস্কার করার পাশাপাশি জীবাণু মুক্ত ঔষধ ছিটান উচিৎ। যেমন- VIROCID, FARM30, VIRCON S, HALAMID, OMNICIDE, TEMSEN ETC ১ লীটার পানিতে ১ গ্রাম মীক্স করে স্প্রে করা ভালো।
জ) যদি প্রতিরোদের ব্যাপার আসে তাহলে হোমিও Tiberculinum 30 দিতে পারেন ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে পুরো খামারে। আপনার খামারে যতটুকু পানি লাগে সেই অনুযায়ী। সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন। আর এই ঔষধ গ্রীষ্ম ও বর্ষার জন্য কবুতরের ঠাণ্ডা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভাল কাজ করে থাকে। আরও কিছু হোমিও ঔষধ যা আপনার প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকেঃ যেমন-
১) Borax 30 = ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন। এটি বায়ু বাহিত রোগ প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকে।
২) Belodona 30= ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন। পি,এম,ভি রোগ প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকে।
৩) Hypericum 200= ১ ফোঁটা করে আক্রান্ত কবতরকে ১০ মিনিট পর পর ৭-৮ বার দিলে ধনুষ্টংকার রোগ প্রতিরোধে ও নিরাময়ে ভাল কাজ করে ভাল কাজ করে থাকে। বিশেষ করে ১-৫ দিনের বাচ্চা কবুতরকে ১ চামচ পানিতে ১-২ ফোঁটা মিক্স করে ১ ফোঁটা করে ৩-৫ বার ১০ মিন পর পর দিলে ভাল ফল হয়।
৪) Nux Bhum 30= ঊচ্চমাত্রার ঔষধ বা অ্যান্টিবায়টিক বা বেশী গরম ঔষধ ব্যাবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কাটাতে ১ ফোঁটা করে ৪ থেকে ৫ বার ১০-১৫ মিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে যদি কোন খাবারের কারনে বিষক্রিয়া হয় তাহলেও এটি ভাল কাজ করে থাকে।
৫) Kali Mur 6x = ১টি করে ট্যাবলেট ১ টি কবুতর কে মাসে একবার দিলে ডীপথেরিয়া রোগ প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকে।
৬) EUPOTORIUM PERFO 30= ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন। এটী ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের রোগ প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকে।
প্রতিকারঃ আমরা প্রতিকারের ব্যাপারে ধৈর্য ধারন করি কম। অথচ রোগের নিরাময়ে এটার গুরুত্ত অপরিসিম। আমাদের মনে কাজ করে ঔষধ যেন কম্পিউটারের বাটন এর মত কাজ করে চাপ দিলাম আর হয়ে গেল। কিন্তু বাস্তবে এভাবে হয়না। আমরা নিজেরা নিজেদের জীবন থেকে শিক্ষা নেয়না। আমাদের অসুখ হলে আমরা কম মাত্রার ঔষধ আগে ব্যাবহার করি পরে ভাল না হলে উচ্চ মাত্রার তাই না? কিন্তু কবুতরের ক্ষেত্রে করি ঠিক তার উল্টাটা কেন? তখন আমাদের বিচার বুদ্ধি হ্রাস পায়। প্রতিকারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করা হচ্ছে তা প্রয়োগের ২ দিনের মধ্যে কবুতরের পায়খানার রঙ পরিবর্তন হচ্ছে কিনা? যদি না হয় তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার প্রয়োগকৃত অ্যান্টিবায়টিক নির্ণয় ঠিক নাই বা আপনার রোগ নির্ণয় সঠিক নাই অথবা এতে কোন কাজ হচ্ছে না তার ফলে আপনাকে দ্বিতীয় বিকল্প চিকিৎসা তে যেতে হবে বা অন্য ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। আমাদের দেশে অধিকাংশ কবুতর খামারি একটি সাধারন সমস্যাই ভুগেন আর এই সাধারন সামান্য সমস্যা কে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যান যেখান থেকে ফিরে আসা মুশকিল হয়ে যায়। যেমন- প্রায় খামারির কবুতর পাতলা পায়খানা করে থাকে। এটি অতি সাধারন সমস্যা কিন্তু এই সাধারন সমস্যা কে এমন জটিল করে ফেলে নানা অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ করে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাতলা পায়খানা কেন হয় তার কিছু কারন নিচে দিয়া হলঃ
১) প্রথমত, কবুতরের পাতলা পায়খানা ঋতু-অনুযায়ী হয়। যেমন- শীতে, গ্রীষ্মে ও বর্ষাই এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে এটা কে অবজ্ঞা করা যাবে না তবে অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ ও করা যাবে না কারন অধিকাংশ পাতলা পায়খানা ভাইরাল আর ভাইরাল সংক্রমনে অ্যান্টিবায়টিক কোন কাজে আসে না। তবে এ ক্ষেত্রে স্যালাইন দিতে হবে বিশেষ করে রাইস স্যালাইন দিলে ভাল আর হামদারদ এর পেচিস যা বর্তমানে ডেনিশ নামে পাওয়া যায় অর্ধেক করে দিনে ৩ বার ৩ দিন দিতে পারেন। Grit ও লবন পানি দিতে পারেন। কারন বেশির ভাগ পাতলা পায়খানা লবন জনিত ঘাটতির কারনে হয়।
২) লবনের ঘাটতি হলে, অধিকাংশ কবুতর পাতলা পানির মত পায়খানা করে থাকে আর এই ঘটনাই ঘটে থাকে বেশীরভাগ খামারে। আর এ ক্ষেত্রে আপনাকে গ্রিট বা লবন পানি সরবরাহ করতে হবে। লবন সরাসরি প্রয়োগ করা যাবে না এতে বিষক্রিয়া হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে। অনেকেরই ধারনা বাজারে যে গ্রিট পাওয়া যায় সেগুলো দিলে কবুতরের জন্য ক্ষতি হতে পারে, আসলে তা ঠিক না। যদি তাই হয় তাহলে তো বাইরের খাবার আপনি খাওয়াতে পারবেন না, তাই না? যে কোন জিনিষ আপনি জানলে জড়ি আর না জানলে ভাত রান্ধা খড়ি। আপনি বাইরের গ্রিট কে এনে একটু গরম করে খেতে দিন না। কোন সমস্যা নাই। আর একটা ব্যাপার চিন্তা করতে হবে যার ২-৩ জোড়া কবুতর আছে, তিনি তো আর গ্রিট তৈরি করতে যাবেন না আর তার পক্ষে সেটা সম্ভবও না।
৩) খাবারে ফাঙ্গাস এর কারনে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে আগে আপনাকে যেভাবে উপদেশ দিয়া হয়েছে সেটা অনুসরন করুন।
৪) অনেক সময় ভিটামিন প্রয়োগের ফলে পাতলা হলুদ ধরনের পায়খানা দেখা দিতে পারে, তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনি যে ভিটামিন টি প্রয়োগ করছেন সেটা নষ্ট হয়ে গেছে, আর এ ক্ষেত্রে আপনাকে সেই ভিটামিন পরিবর্তন করতে হবে।
৫) অনেক সময় new adult কবুতর প্রজননের সময় পাতলা পায়খানা করতে পারে, এটি অতি সাধারন একটি ঘটনা, বিভিন্ন প্রাণী বিভিন্ন ভাবে এই জিনিসটা জানান দেয়।
৬) ভ্রমন জনিত কারনে পাতলা পায়খানা করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে শুধু স্যালাইন ও গোসল দিবার ব্যাবস্থা করতে হবে। বা অনেক সময় স্ট্রেস বা পানি শূন্যতার লক্ষণ প্রকাশের সময় এই ধরনের পাতলা পায়খানা করতে পারে সেটা আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। কবুতরের স্ট্রেস ও পানিশূন্যতার উপর যে পোস্ট আছে তা পরে আপনারা জানতে পারবেন কেন এটা হয়।
৭) দূষিত পানির কারনে বা বিশুদ্ধ পানির অভাবে পাতলা পায়খানা হতে পারে, আর এই কারনে আপনাকে ফুটান পানি, ফিল্টার পানি বা গভির নলকূপের পানি ব্যাবহার করতে হবে। পানির ও খাবারের পাত্র নিয়মিত পরিস্কার রাখতে হবে। বাইরের স্যান্ডেল খামারে প্রবেশ করান যাবে না। বা যদি কোন ব্যাক্তি ডাইরিয়ায় আক্রান্ত থাকে তাহলে তাকে খামারে প্রবেশ করান যাবে না বা যিনি খাবার ও পানি পরিবেশন করবেন তাকে হাত মুখ ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।
৮) যদি পাতলা পায়খানাটা চাল ধুঁয়া পানির মত হয় বা বমি করতে থাকে অনবরত তাহলে, চালের স্যালাইন দিবেন পেচীশ ১ টা করে দিবেন দিনে ৩ বার আর হোমিও champhor 30 দিতে পারেন ১ ফোঁটা করে দিনে ৫-৬ বার, যদি পায়খানা গোটা খাবার সহ হয় তাহলে হোমিও Chaina 30 দিতে পারেন ১ ফোঁটা করে ৪-৫ বার। বমি বন্ধের জন্য হোমীও Ipicac 30 ১ ফোটা করে দিবেন ১০ মিনিট পর পর।
বর্ষা কালীণ মাসিক ছকঃ
১লা-৫তম দিনঃ সাল্মনেল্লা কোর্স– ২ টেবিল চামচ শাফি+ ২ টেবিল চামচ ফেবনিল+মারবেলাস ১ চামচ= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৪-৫ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করাবেন (একটানা)। অথবা (হোমিও ব্যাপ্তেসিয়া ৩০, ১ সিসি =১ লিটার পানিতে মিক্স করেও ৫ দিন আপনি এই কোর্স করাতে পারবেন।
(বিঃদ্রঃ এই কোর্স চলাকালীন কবুতর সবুজ পায়খানা করতে পারে, আর এই অবস্থাই ঔষধ বন্ধ করা যাবে না, এটা ভিতরের জীবাণু বের করতে সাহায্য করে। একটানা করাতে হবে ও ধরে খাওয়ানো যাবে না ও অসুস্থ কবুতর কে খাওয়ানো যাবে না, তাতে বমি করতে পারে বা সরাসরি খাওয়ানো যাবে না। বাচ্চা থেকে বাবা-মা কেও খাওয়াতে পারবেন। কারন এ সময় তারা সরাসরি কোন খাবার দেয় না। কর্প মিল্ক খাওয়ায়।)
৬তম দিনঃ আলভিরা ব্লেন্ড করে জুস করে বা স্যালাইন(ভেট এর) বা লেবুর রস ও লবন যোগ করে দিতে পারেন বা ভিটামিন সি প্রয়োজন মত ব্যাবহার বা প্রয়োগ করতে পারেন।
৭তম-১২তম দিনঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হিসাবে (toxynil, biovit, Rena B+C) ১ সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করাবেন (একটানা)। ( এর সাথে যদি মনে করেন রেনা কে ভিটামিন তাও মিক্স করে ব্যাবহার করতে পারেন। ১০(দশ) লিটার পানিতে ১ গ্রাম রেনা কে এই অনুপাতে প্রয়োগ করতে চেষ্টা করবেন।)
১৩তম দিনঃ হোমিও Belodona 30, ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করাবেন (মাসে ১ বার)।
(বিঃ দ্রঃ প্যারামক্সি বা এই ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করবে। যারা মুরগির ভ্যাকসিন দিবার জন্য পারাপারি করেন তাদের জন্য এটি ভাল কাজ করবে।)
১৪তম-১৭তম দিনঃ ক্যালসিয়াম ও ই ভিটামিনের জন্য (Calcium Forte or Calfast or Calbo D etc ) এইধরনের ভাল মানের ভিটামিন প্রয়োগ করতে পারেন, ১ সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৩-৪ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করাবেন (একটানা)।
১৮তম দিনঃ রসুন বাঁটা +মধু+লেবুর রস।(১ লিটার পানিতে ২ চা চামচ রসুন বাটা,২ চা চামচ মধু আর ১ চামচ লেবুর রস মিক্স করে দিলে ভাল। তবে পানি অবশ্য ছেকে নিতে হবে। আর লেবু চিপার সময় গ্লভস বা লেমন ইস্কুইজার ব্যাবহার করবেন। এটা শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবে।তবে খেয়াল রাখতে হবে যে এই কোর্স করার আগে ক্রিমির ঔষধ দিয়া আছে কিনা তা জেনে নিবেন। কারন ক্রিমি থাকলে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।)
১৯তম দিনঃ হোমিও Borax 30 ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন কবুতরের খাদ্য পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন।
২০তম দিনঃ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দিন।( এক্ষেত্রে আমিরিকার তৈরি অ্যাপেল সিডার দিয়া উত্তম। তবে অপরিশোধিত টি পেলে ভালো এটা সাল্মনিল্লা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। ১ লিটারে ১ সিসি বা তার কম, বেশি প্রয়োগ করবেন না তাতে বিপরিত ফল হতে পারে।)
২১তম দিনঃ আলভিরা ব্লেন্ড করে জুস করে বা স্যালাইন(ভেট এর) বা লেবুর রস ও লবন যোগ করে দিতে পারেন বা ভিটামিন সি প্রয়োজন মত ব্যাবহার বা প্রয়োগ করতে পারেন।
২২তম-২৬তমঃ পর্যন্ত লিভার টনিক দিন।( অধিকাংশ কবুতর লিভার জনিত সমস্যায় বেশি ভুগে থাকে। তাই লিভার এর ব্যাপারে একটু খেয়াল রাখা জরুরি।১-২ চামচ ১ লিটার পানিতে এক্ষেত্রে হামদারদ এর Cinkara, Icturn, Karmina ইত্যাদি ব্যাবহার করা যেতে পারে।)
২৭তম দিনঃ হোমিও Calceria Curb 30 ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন। এটি বর্ষায় আপনার কবুতরের সাধারন ঠাণ্ডা জনিয় সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকবে।
২৮তম দিনঃ লিকার বা লাল চা বা গ্রিন টি(চা) দিয়া ভাল।( এটা কাঙ্কার প্রতিরোধে ও ভাল ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনে সাহায্য করবে।)
২৯-৩২তম দিনঃ মাল্টি ভিটামিন দেয়া ভাল। ( এক্ষেত্রে All Vit Ma(Made in Germany) দেয়া যেতে পারে। এতে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবে। সকল ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাব পূরণ করবে।)
৩৩তম দিনঃ আলভিরা ব্লেন্ড করে জুস করে বা স্যালাইন(ভেট এর) বা লেবুর রস ও লবন যোগ করে দিতে পারেন বা ভিটামিন সি প্রয়োজন মত ব্যাবহার বা প্রয়োগ করতে পারেন।
৩৪তম দিনঃ কাচা হলুদ ১ চামচ ১ লিটার পানিতে মীক্স করে সাধারন পানি হিসাবে দিতে পারেন। এটি আপনার কবুতরকে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমন থেকে রক্ষা করবে।
এই ছক যে আপনাকে অনুসরন করতেই হবে এমন কন বাধ্যবাধকতা নাই, এটা আপনার পছন্দ অনুযায়ী পরিবর্কতন করে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন অসুস্থ কবুতর কে বিশেষ করে যদি পক্স এ আক্রান্ত হয় তাহলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ছাড়া অন্য কোনও ভিটামিন দিবেন না। তাহলে তাতে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার খামারে কোন অবস্থাতেই বৃষ্টির পানি না আসে বা কবুতর না ভিজে। যদি আপনি আপনার খামারের সঠিক যত্ন নেন আশাকরি এই বর্ষা অনায়াসে।নিশ্চিন্তে পার করতে পারবেন।(ঈংশাআল্লাহ)।
পরিশেষে, যারা কবুতর প্রেমী তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি মনে পড়ে গেল। এটিকে আবার কেউ আবার ‘Virtual love’ এর কথা বলা হয়নি ‘Universal Love’ এর কথা বলা হয়েছে। কারন ফেসবুক এর অধিকাংশ মানুষ ভালবাসা বলতে অন্য কিছু মনে করেন। তাদের জন্য এই উক্তি নয়।
“You don’t know about real loss, ’cause it only occurs when you’ve loved something more than you love yourself. And I doubt you’ve ever dared to love anybody or anything that much!” (Good Will Hunting)
মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই