কবুতরের জুড়ী প্রস্তুত প্রণালী ও আদর্শ প্রজনন পদ্ধতি

কবুতরের জুড়ী প্রস্তুত প্রণালী ও সঠিক/আদর্শ প্রজনন পদ্ধতি (Pigeon Pairing and Ideal Breeding System )

“আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।” ( আল কোরআনঃ সূরা আয- যারিয়াত- আয়াত-৪৯)

সামাজিক সাইট একদিকে যেমন ভাল লাগে অন্যদিকে তেমনি খারাপ লাগে সেই সব উজবুক ছেলে মেয়াদের জন্য যাদের জ্ঞান কম। যাদের স্ট্যাটাস দেখলেই বুঝা যায় কোন পরিবারের আর কোথা থেকে এসেছে। গতকাল এক ছেলে একটি অর্ধউলঙ্গ মডেলের ছবি দিয়ে লিখেছে “Heaven is inside her.” !

কি ধরনের শিক্ষা সে পেয়েছে তা না হয় পরে আলোচনা করব। এসব উজবুক দের ধারনা নেই যে এসব সামাজিক সাইটগুলেতে তার বাবা তার বাবার বয়সী লোক তার ছোট ভাই বোনও থাকতে পারে। আমি স্ট্যাটাসটি দেখে যারপনায় লজ্জিত ও ব্যাথিত হলাম। কারণ এই সাইটে আমার ভাগ্নি,ভাইস্তা, ছাড়াও অনেক ছোট বড় নানা আত্মীয় স্বজন আছেন। তারা কি ভাববে…? এ সবাইকে আমার সামাজিক সাইট এর বন্ধু…? এত নিচু মন মানসিকতার।

কিছু দিন আগে বাস স্ট্যান্ড এ দাড়িয়ে আছি। দুইটি স্কুল পড়ুয়া ছেলেও দাড়িয়ে আছে একটু দূরে। তারা বেশ জোরে জোরে কথা বার্তা বলছিল। কিছু কানে আসছিল। এক সময় একটা মেয়েকে দেখে তাদের আলোচনার মাত্রাটা বেড়ে গেল। তারা বাজি ধরছে যে মেয়েটি কি রঙের অন্তবাস পড়ে আছে। কি আশ্চর্য? এটা কি আমাদের সংস্কৃতি ? বলা হয় “Behavior should come from family…! ” আমরা আধুনিকতার নামে ছেলে মেয়েদের কে খেয়াল করি না। তাদের হাতে আধুনিক মোবাইল ও নেট সংযোগ দিয়েছি। কিন্তু একবারের জন্য কোনদিন কি জানতে চেষ্টা করেছি তার কি করে? কিভাবে এর ব্যাবহার করে বা তাদের কে সেই সংস্কার দেয়া হয়েছে যাতে তারা বিপথে যাবার আগে একটু চিন্তা করবে। না এ পথে গেলে গুনাহ হবে এটা করা যাবে না ওটা করা যাবে না।


এক মেয়ে গান গাইছে “ঝুমকা গিরা রে… !”  গিরার জায়গাতে সে গেরা বলাতে তাড়াতাড়ি তার মা থাকে ভুল সুধ্রে দিতেছে আরে গেরা না গিরা…! কিন্তু জীবনের বড় বড় ভুল গুলো কি করার আগেই সতর্ক করছেন? বা শুদ্রে দিবার চেষ্টা করছেন? আজকাল মায়েদের বয়ফ্রেন্ড ও ছেলেদের গ্রালফ্রেন্ড না থাকলে নাকি… তার নাকি মানসিক সমস্যা আছে। এটা কি আপনার কথা নাকি পশ্চিমা মিডিয়া আর পার্শ্ববর্তি দেশের সংস্কৃতি আমাদের এটা শিখাচ্ছে। ছাত্র জীবনে এমন কোন দিন ছিল না যে সন্ধ্যার আযান দিচ্ছে তার মধ্যে বাসাতে ফিরতে হবে। আজানের পর যদি আসতাম তাহলে যদি সঠিক জবাব দিতে না পারা যেত তাহলে সেদিন আর মার মাটিতে পড়ত না। আমারা জীবনের অনেক বছর পার করে এসেছি বলে যাবার পরও নানা প্রশ্নে জর্জরিত হতে হয়। আজও দেরি হলে মা জিজ্ঞাস করে এত দেরি হল কেন কোথাই গিয়েছিলি? এটা কেন? এটাই হলো অনুশাসন। আর জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত এর ব্যাতিক্রম হবে না। হওয়া উচিত না। বলা হয় একটি ছেলে মেয়ে যেমন বাবা মার জন্য আশীর্বাদ তেমনি অভিশাপ। আমাদের মৃত্যুর পর এটি যেমন নাজাতের জারিয়া হিসাবে কাজ করবে অন্যদিকে যদি আপনি তাকে সঠিক ভাবে দীন ই ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে না যান তাহলে আপনার আফসোসের সীমা পরিসীমা থাকবে না। আমাদের নাম ইসলামিক মোতাবেক কিন্তু ইসলামী শাসন মোতাবেক কি চলি? এক বুজুর্গ বলছিলেন। কালেমা পড়, নামাজ পড়, রোজাও রাখ কিন্তু তুমি কি আসলেই মুসলমান ? প্রশ্নটা সবার কাছে।

কবুতরের আদর্শ জোড়া প্রস্তুত ও সঠিক প্রজনন প্রণালী বা ভাল মানের বা জাতের কবুতর প্রজনন (ব্রিডিং) খুব একটা সহজ ব্যাপার না। আর একজন সফল বা আদর্শ  কবুতর খামারি হওয়া ছেলেখেলা নয়। কথায় আছে একটি কবুতর ১২ মাসে ১৩ বার ডিম বাচ্চা করে। আর একজন নতুন খামারি এরই স্বপ্নে বিভোর হয়ে কবুতর পালন শুরু করে। আর এর পরই শুরু হয় তার অগ্নি পরীক্ষা। যাই হোক একজন আদর্শ খামারি যদি বছরে ৪-৫ জোড়া ভাল মানের বাচ্চা তুলে বড় করতে পারে তাহলেই কেবল একটু স্বস্তির বা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটার ব্যাতিক্রম হয়। বাচ্চা বড় করা তো দূরের কথা কবুতর ব্রিডিং জোড়ার বাচাতেই ব্যাতিবাস্ত থাকতে হয় অধিকাংশ খামারিকে। ব্যাপারটা এ রকম হয় যে ভিক্ষা চাই কুত্তা সামলানোর মত অবস্থা হয়। একজন খামারি কে প্রতিনিয়ত কবুতরের বিভিন্ন রোগ বালায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমন, ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমন, ডিমের ভিতর বাচ্চার মৃত্যু, অনুরব ডিম, নেষ্ট এ বাচ্চার মৃত্যু, একটু বড় অবস্থায় বাচ্চার মৃত্যু, প্রতিদিন খাবার ও পানি সরবরাহ ও নিয়মিত চেক করা, চরম আবহাওয়া (আতি গরম বা শীত বা বৃষ্টি)। এ সব প্রতিকুলতা সামাল দিতে গিয়ে একজন খামারি অনেক সময় ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তারপরও তাকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এ সব বিষয় দেখতে হয় দিনের পর দিন। আর এ ক্ষেত্রে একজন খামারির অধিক ধৈর্যই এ সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে সফলতা এনে দেয়। আর এই ধৈর্য একজন খামারি অর্জন করে অনেক দিন ধরে, যদিও ধৈর্য ও অভিজ্ঞতাকে যদি একজন খামারির সফলতা ধরে নেয়, তাহলেও একটু বিতর্ক থেকেই যায়। কারন এর সঙ্গে ভাগ্য ও কিছুটা আপনার সাথে থাকতে হবে। যেমন আপনি হয়ত আপনার অভিজ্ঞতা ও ধৈর্য সহকারে খামার পরিচালনা করছেন ঠিকমত, হটাৎ দুর্ভাগ্য এসে আপনার খামারে বাসা বাধল, তাহলেও বেশী সময় লাগবে না, আপনি কিছু বুঝে উঠার আগেই খুবই অল্প সময়েই আপনার খামার ঝড় বাতাসের মত লণ্ডভণ্ড করে চলে যাবে। আপনি যদি নিয়মিত সুস্থ সবল ও ভাল মানের কবুতর প্রজনন করতে চান তাহলে আপনাকে কিছু সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে। যা এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলঃ

১) কবুতরের আচরন ও বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণঃ

কবুতর একটি খুব জটিল পাখি এবং মানুষের সাথে তুলনা করা যেতে পারে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে বিদ্যমান। তারা যখন বংশবৃদ্ধি করে তা তারা জীবনের জন্য বংশবৃদ্ধি করে থাকে। একটি ভালো কবুতর তার একটি সঙ্গীর সাথে কমপক্ষে ১০ বছর সফল ভাবে ব্রিডিং করতে পারে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজন খামাড়ী নানা কারনে জোড়া পরিবর্তন করে থাকে। যা একটি খামারির অধৈর্যতার পরিচয় বহন করে থাকে। একজন অভিজ্ঞ খামারি প্রাথমিক অবস্থাই অর্থাৎ আমরা যাদের শূন্য পড় বা বাচ্চা বা বেবি বলি সেখান থেকেই কবুতরের আচরন ও বৈশিষ্ট্য দেখে নর ও মাদি নির্বাচন করে জোড়া তৈরি করতে হয়। আর এটা করতে নর ও মাদির আচরন ও বৈশিষ্ট্য দেখেই শুধু এরূপ করা সম্ভব হয়। অনেকেই আবার রিং এর দ্বিতীয় প্রজন্ম এর বাচ্চা বা রিং এর জোড়া বলে কবুতর কিনেন। কিন্তু ভাল করে জেনে নিবেন যে এটা আদৌ রিং এর (নাকি নিজের লাগান রিং) যা প্রায় ঘটে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনার অভীষ্ট লক্ষ ব্যাহত হবে। যদিও অনেকেই নতুন পূর্ণবয়স্ক বা সম্পূর্ণ বয়স্ক কবুতরের দিকেই বেশী ঝুকেন তাদের বায়গ্রাফি না জেনেই। আর এটাই অধিকাংশ খামারির সবচেয়ে বড় ভুল। (কিভাবে বৈশিষ্ট্য ও আচরন দেখে নর মাদি চিনবেন তা এ সম্পর্কিত একটি পোস্ট এ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।) শুধু যে জোড়া নির্বাচন এর জন্যই না একটি কবুতরের রোগ ব্যাধি ও সমস্যা নির্ণয়ে এই চরিত্রগত আচরন আপনাকে অনেকাংশে সাহায্য করবে।

২) প্রজনন জোড়া কে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে সতর্কতাঃ

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে কিছু অ্যান্টিবায়টিক আপনার কবুতরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর এ বিষয়ে আপনাকে আগেই সতর্ক হতে হবে। অ্যান্টিবায়টিক বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কারনের জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কারন যাই হোক সমস্যা সুদূর প্রসারি হয় সেটা প্রজনন সময় ব্যবহৃত হলে। যদিও অধিকাংশ খামারি, এর গুরুতর প্রভাব সম্পর্কে না জেনেই এগুলো ব্যাবহার করেন বা ব্যাবহার করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ব্রিডিং পেয়ার কে অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের কুফল সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়া হলঃ

ক) ব্রিডিং পেয়ার কে অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের ফলে তা ডিমের মাধ্যমে বা খাওয়ানোর মাধ্যমে বাচ্চার উপর সরাসরি ক্রিয়া করে, আর এর শেষ ফলাফল বাচ্চার বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা।
খ) বাচ্চার অপূর্ণতা বা শারীরিক বিকলাঙ্গতা।
গ) ডিমের ভিতর বাচ্চার মৃত্যু।
ঘ) অ্যান্টিবায়টিক অতি প্রয়োগের ফলে কবুতরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
ঙ) অ্যান্টিবায়টিক অতি প্রয়োগের ফলে নরের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়।(যদিও সব ক্ষেত্রে নয়।)
চ) খেয়াল রাখতে হবে যে,আপনি যে অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করছেন তা তা যেন আপনার কবুতরের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া না করে।
ছ) বাচ্চার হটাৎ মৃত্যু।
জ) খেয়াল রাখতে হবে যে,আপনি যে অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার ফলে কোন প্রকার অদ্ভুত আচরন করছে কিনা। যেমনঃ এক জায়গায় বসে থাকা, বা টলমল করা, বা হটাৎ পড়ে যাওয়া বা বমি করা, বা সাড়া শরীর কাঁপা, বা লোম ফুলিয়ে বসে থাকা। এগুলো লক্ষণ অতি মাত্রায় অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের অন্যতম কারন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

আপনি এ ধরনের পর্যবেক্ষণ যে শুধু ব্রিডিং পেয়ারকেই করবেন তা নয়। আপনাকে অন্য কবুতর গুলোর ক্ষেত্রেও এ রকম খেয়াল করতে হবে। প্রয়োজনে আপনি তাদের জন্য একটা ছক তৈরি করতে পারেন। মনে রাখবেন পূর্ণ বয়স্ক কবুতরের থেকে ইয়ং/তরুন বা বাচ্চা কবুতরই বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর তাই এদেরকে আগেভাগে চিকিৎসা ব্যাবস্থা করতে হবে। আপনার খামারের স্বাস্থ্য বিধি আপনার কবুতরের জন্ম থেকে পূর্ণ বয়স হবার পর মৃত্যু পর্যন্ত পালন করতে হবে। মনে রাখবেন প্রজনন কাল শুরু হবার একমাস আগে থেকে আপনি যেমন আপনার পাখিদের মধ্যে প্রোটিন মাত্রা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ প্রজনন ঋতু সময় ব্রিডিং পেয়ার খুবই চাপে (Stress) থাকে এই সময় প্রোটিন মাত্রা বৃদ্ধি প্রজনন ঋতু প্রস্তুতির জন্য সাহায্য করে থাকে। অতিরিক্ত ফিড প্রোটিন যুক্ত করে এটি করা যাবে। পাশাপাশি আপনাকে এর সঙ্গে ক্যালসিয়াম ও অত্যাবশ্যক ভিটামিন এবং পুষ্টির প্রদান নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৩) প্রয়োজনীয় লবন ও মিনারেল এর ঘাটতিঃ

কবুতরের প্রজনন কালে লবনের ঘাটতি একটি মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। যদি আপনার মাস্টার পেয়ার বাচ্চা খাওয়াই আর এরই মধ্যে ডিম দেয় তাহলে এই সময়ে আপনার কবুতরের বাচ্চা ও মাস্টার পেয়ার কে একটু অধিক পরিমানে মিনারেলস(ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি যেগুলো ভাল মানের মাল্টি ভিটামিন এ পাওয়া যায়) ও লবনের ঘাটতি যাতে না হয় সে জন্য সব সময় গ্রিট সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কারন এর অভাবে মাস্টার পেয়ার ও বাচ্চার নানা শারীরিক সমস্যা সহ এর বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা এমন কি মারাও যেতে পারে। লবনের ঘাটতি পর্যবেক্ষণের সবচেয়ে সহজ প্রক্রিয়া হল,

ক) তাদের পায়খানার পরিবর্তন হবে সেটা লক্ষ করাঃ লবনের ঘাটতি হলে তাদের পায়খানা পাতলা পানি পানি বেশী হবে, যার ফলস্রুতিতে কবুতরের বাসা সব সময় ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকবে, আর স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারনে বাসায় ব্যাকটেরিয়াসহ না জীবাণু জন্মাবে ও বাচ্চা খুব তাড়াতাড়ি আক্রান্ত হবে। কারন বাচ্চা অবস্থায় কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবচেয়ে কম থাকে।
খ) তাদের খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন হবে তা লক্ষ করাঃ কবুতরের লবনের ঘাটতি হলে তারা স্বাভাবিক খাবারের থেকেও একটু বেশী খাবার গ্রহন করে থাকে। লবনের ঘাটতি পুরনের লক্ষে। যদিও অনেকেই এটাকে একটি ভাল লক্ষণ বলে দাবি করে, কিন্তু আসলে তা ঠিক না। অনেক সময় গ্রিট বা অনেকেই গ্রিট এ নিদিষ্ট পরিমান লবন যোগ করতে ভুলে যান বা নিন্ম মানের গ্রিট এর অভাব থাকে ফলে গ্রিট অনেক সময় প্রয়োজনীয় লবনের ঘাটতি পুরনে বার্থ হয়। তবে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি লবনের ঘাটতি পুরনের জন্য আবার কাঁচা লবন আপনার কবুতর কে খেতে দিবেন না এতে আপনার কবুতরের বিষক্রিয়া হয়ে মারা যেতে পারে। আর তাই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন এটার প্রতিরোধ করতে গিয়ে যেন জীবনের প্রতিরোধ না হয়ে যায়।
গ) অস্বাভাবিক আচরন করবে তা খেয়াল রাখাঃ অধিক লবন বা ঘাটতি কবুতরের মস্তিস্কে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যদি আপনার কবুতর অস্বাভাবিক আচরন করে বা টলমল করে বা যদি দেখেন ঝুম ধরে বসে থাকে বা শুকনো পায়খানা ঠুকরে খাওয়া শুরু করে বা অনেক সময় বাচ্চা কে ঠোকর দিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে বা বাচ্চার রক্ত যুক্ত পড় খেতে থাকে বা ঠুকরাতে থাকে। তাহলে বুঝতে হবে আপনার কবুতর মারাত্মক লবন ঘাটতিতে ভুগছে। আর এই ঘাটতি আপনার কবুতরের নিয়মিত প্রজননে ব্যাপক ব্যঘাত ঘটতে পারে। প্রজননের ব্যাঘাত বলতে শুধু ডিম পাড়া বুঝায় না এর মধ্যে ডিম না জমা বা ছোট ডিম পাড়া বা ডিমের ভিতর বাচ্চার মারা যাওয়া ইত্যাদি অন্তভুক্ত। অনেক সময় লবনের বেশী ঘাটতি হয় যদি আপনি ঘন ঘন ডিম বাচ্চা করেন। বাচ্চা খাওয়ানোর সময় একটা কবুতরের অধিক লবনের ঘাটতি হয় আর এই সময় আপনি যদি পর্যাপ্ত লব সরবরাহ না করেন তাহলে তাদের দেহে সঞ্চিত লবন বাচ্চা খাওয়ানোর মাধ্যমে বের হয়ে যায় ফলে তারা অস্বাভাবিক আচরন করে থাকে। এমতাবস্থাই একজন অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে হবে।

৪) সফল প্রজনননের প্রয়োজনীয় টিপস ও বাসা তৈরির অাভাসঃ

সফল প্রজনননের বয়স একটা বড় ব্যাপার। আর এ ক্ষেত্রে একটি প্রমানিত শর্ত যে মাদির থেকে নরের বয়স কম হলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। ভাল জাত পাবার আরেকটি ফর্মুলা হল আউট ব্রিডিং (ইন ব্রিডিং নয়) করতে হবে। আর এগুলো নিয়ে একজন ব্রিডার পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে কোনটি তার জন্য উপযুক্ত সেটা নির্ধারণ করতে পারে না। যখন একটা নর বা মাদি ডিম বা বাচ্চা উৎপাদনের প্রস্তুতি নেয় তখন এদের আলাদা ভাবে কিছু ভুমিকা পালন করে থাকে। যখন এরা ব্রিডিং বা প্রজননের আগে এরা একটা উপযুক্ত জায়গা বাছাই করে যেখানে তারা ডিম পাড়া ও বাচ্চা লালন পালন করতে পারে। তাই বাটি দিবার পরও অনেক সময় বাটিতে না পেড়ে খাচাই পাড়ে এর অর্থ হল সে তার জায়গা টা পছন্দ হইনি অথবা সেখানে পর্যাপ্ত আড়াল নেই। আর নররের জায়গা পছন্দ হলে মাদি কে ডাকে মাদির জায়গা পছন্দ হলে সেখানে সে বসে না হলে ওখান থেকে সরে যায়। কবুতর তার বাসা খুবই ঢিলেঢালা ভাবে তৈরি করে থাকে, আর আপনি যদি তার প্রয়োজনীয় উপাদান বা বাটি সময় মত সরবরাহ না করেন তাহলে সে ডিমটি পাড়বে ও ভেঙ্গেও ফেলবে। আর এভাবেই একটা কবুতরের ডিম ভাঙ্গা ও খাওার অভ্যাস গড়ে উঠতে পাড়ে। যার জন্য হয়ত আপনাকেই অনেক মূল্য দিতে হতে পারে এই অভ্যাস ছাড়ানোর জন্য। কবুতরের প্রজননের সময় অনেক খামারি হয় খেয়াল করেন না যে তাদের বাসায় বাচ্চা আছে। কারন বাচ্চা নেস্ট এ থাকা অবস্থায় ব্রিডিং পেয়ার ঠিক মত প্রজনন করতে পারে না কারন এ সময় বাচ্চা গুলো এসে খাবারের জন্য তাগাদা দেয় ফলে ব্রিডিং এ অসুবিধা হয়ে যায় বা ডিম পাড়ার পড় বাচ্চারা ঠিক মত তা দিতে দেয় না বা ডিম ফেলে দিতে পারে বাটি থেকে বা ডিমের ভ্রু নষ্ট করে দিতে পরে ডিম এর পর্দা ছিড়ে ফেলে বা যারা খোলা ভাবে পালেন তাদের সন্তানদের মাঝে যদি কোন নতুন বয়স্ক আলাদা নর থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে সেও একটা বড় বাধা হতে পারে এই ব্রিডিং পেয়ার এর জন্য। আর এর ফলাফল খুবই খারাপ হয়। আর এ সব কারনেই একজন ব্রিডার সফল ভাবে ব্রিডিং এ ব্যর্থ হন। এজন্য একজন ব্রিডারকে কিছু ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হয়। যেমনঃ

একজন ব্রিডার যিনি সফল ভাবে ব্রীড করাতে চান, তারা যেন খামার প্রতিস্থাপন সঠিক ভাবে করেন, যাতে একটি ব্রিডিং পেয়ার সফল ভাবে প্রজনন করতে পারে। বা বাচ্চা কবুতর বা ছাড়া কবুতর কে কোন বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। আর এ কারনে বাচ্চা কবুতরের জন্য যারা নতুন ভাবে কেবল খেতে শিখেছে তাদের আলাদা জায়গায় রাখারা ব্যাবস্থা করে যেখান থেকে তারা তাদের জুটি নির্বাচন করবে জীবনের প্রথম থেকেই। আর এ ক্ষেত্রে ধাপরি হল সবচেয়ে ভাল জায়গা, কারন এখান থেকে বড় হবার আগেই তারা তাদের জুটি নির্বাচন করে ফেলে আর অবশ্যই এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন একটা জাত আরেকটা জাতের কবুতরের সাথে ব্রীড না করে বা জোড়া নিবার চেষ্টা না করে। কারন বেশী বয় হয়ে গেলে একজন ব্রিডার কে জোড়া দিবার জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয় আর এই সময় তাদের মধ্যে মারামারি হবার সমুহ সভাবনা থেকেই যায়। কবুতর একবাড় ডিম বাচ্চা তুলার পর বাচ্চা ১৫ দিন বয়স থাকা অবস্থাই তারা পুনরায় প্রজনন শুরু করে দেয় আর এই সময়টাই বেশী খেয়াল রাখতে হয়।

৫) ডিম সংরক্ষণ ও ফসটারিং করাঃ

কিছু কবুতর আছে যারা তাদের ডিম সফল ভাবে ফুটাতে বা বাচ্চা লালন পালন করতে পারে না। তাদের মধ্যে কিং, স্ত্রেসার, পোটার ইত্যাদি অন্যতম। আর এ কারনে এদের ডিম গুলো চেলে দিতে হয় ফস্টার কবুতরের নিকট যাতে তারা সফল ভাবে ডিম ফুটাতে ও বাচ্চা লালন পালন করতে পারে। এটা খুব একটা জটিল কোন ব্যাপার না কিন্তু এটা সঠিক ভাবে করতে হয় বাচ্চাদের সঠিক বৃদ্ধি ও বাঁচানোর জন্য । সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডিম চালার ব্যাপারে, একজন খামারি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ফস্টার বা প্রতিপালক পিতামাতা আসল ডিম পাড়া জোড়ার ডিম পাড়ার সময়ের পার্থক্য যেন ৩ দিনের বেশী না হয়। এর কারন হল যে ফস্টার পিতামাতা কে এর আগন্তক এর জন্য তৈরি হতে হয়। যদি সময়ের ব্যাবধান কম বা বেশী হয় তাহলে ফস্টার জোড়ার পর্যাপ্ত কর্প মিল্ক তৈরি হয় না ফলে বাচ্চার বৃদ্ধি ব্যাহত হয় বা বাচ্চা মারা যেতে পারে। আর যদি দেরিও হয় তাহলে ফস্টার জোড়া হয়ত ভাবতে পারে এটা অনুরবর ডিম তাই তারা ডিম কে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করতে পারে। একটা ডিম সংরক্ষণ বা চালান একজন খামারির মনমত হয় না। আর একটা কঠিন সময় এসে উপস্থিত হয়। একটা ডিম সংরক্ষণ ৩-৫ দিনের বেশী রাখা ঠিক না আর এটা করতে হবে খুবই সতর্কতার সাথে। যেমন আপনি যদি ডিম সংরক্ষণ করতে চান তাহলে তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে, আর এই তাপমাত্রা ১২ সেঃ থেকে ১৫ সেঃ ও ৭৫% থেকে ৮৫% আদ্রতা থাকা বাঞ্ছনীয়। আর দিনে কম পক্ষে ২ বার ডিমের পাশ পরিবর্তন করতে হবে। আর এটা অবশ্য নরম জায়গায় রাখতে হবে যেন ডিমের গায়ে কোন প্রকার ক্ষতি সাধন না হয়। ডিমে পানিতে চুবান বা বেশী পানিতে ধুয়া যাবে না। তবে তুলাতে করে মুছে নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে ময়লা ডিমের থেকে পরিস্কার ডিম ফুটার সভাবনা বেশী থাকে। এর কারন ডিমের অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। অনেকে মনে করেন ডিম ১০ দিন পর্যন্ত ধরে রাখা যায় কিন্তু এতে ডিম ফুটার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। ডিম যখন কবুতরের পেটের নিচ থেকে নেয়ার সময় হাতের তালু দিয়ে ধরবেন যাতে কবুতরের পাখার বাড়িতে বা ঠোঁটের আঘাতে ডিমের ক্ষতি সাধন না হয় বা বেশী তাড়াহুড়ো না হয় এতে কবুতর ভয় পেয়ে লাফ দিতে পারে আর তাতে কবুতরের পায়ে লেগে বাটি থেকে ডিম পরে গিয়ে ফেটে যেতে পারে। ডিম কোন ভাবেই ঝাকান যাবে না বা বেশী নাড়াচাড়া করা যাবে না এতে ডিমের ভিতরের মেমব্রেন বা পর্দা ফেটে গিয়ে ডিম নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

৬) বাচ্চা কবুতরের যত্নঃ

বাচ্চা কবুতরের পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি একটি প্রক্রিয়া। প্রথম জন্মের এর পর থেকে খুব রোগ প্রবন হয় অর্থাৎ অল্পতেই রোগাক্রান্ত হতে পারে। কবুতরের বাবা ও মা উভয়ই বাচ্চা কবুতরের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা দুজনেই পালা ক্রমে বাচ্চার দেখাশোনার জন্য সক্রিয় থাকে। কবুতর তাদের বাচ্চা খাওয়ানোর ও জন্মের পর থেকে প্রথম ১০ থেকে ১২ দিন মাদী বাচ্চাদের ঠোঁট তাদের মুখের ভিতরে নিয়ে সেখানে তরল সাদা জাতীয় পদার্থ বা খাবার বাচ্চাদের গলার ভিতরে পাম্প করে ঢোকাতে থাকে একটি milkish ধরনের আর এটিকে ক্রপ মিল্ক বলে। অনেকেই আছেন যারা মনে করেন কবুতরের বাবা মা যা খায় সেগুলো সরাসরি খাওয়ায়। আর তাই ভিটামিন ও মিনারেলস দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয় না। ১২ দিন পর থেকে তারা সরাসরি খাওয়ায় কিন্তু সব ক্ষেত্রেই গিট, মিনারেলস, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম দেয়া খুবই জরুরী বাচ্চার যথাযথ বৃদ্ধির জন্য সেটা খেয়াল রাখবেন। এভাবে মা বাবা ১৫-২০ দিন পর্যন্ত পালা ক্রমে খাওয়ায় এর পর শুধু বাবা এর দায়িত্ব নেয়। আর মা কবুতর আবার নতুন ভাবে তৈরি হয় পরবর্তী প্রজন্ম কে স্বাগত জানানোর জন্য, এরপর সে বাসা তৈরি করতে বা বাটিতে তে বসতে শুরু করে বা ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। বেবি কবুতর ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে খাওয়া শিখা শুরু করে পানিতে মুখ দেয় বাবা মা দের দেখা দেখি। আর এভাবেই তাদের শুরু হয় জীবনের আরেকটি অধ্যায়। এভাবেই আরও ৭ দিনের মধ্যে তারা নিজেদেরকে স্বয়ং সম্পূর্ণ করতে শিখে আর বাবা মা দের থেকে আলাদা হয়ে গেলেও তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক রয়েই যায় বেশী কিছুদিন পর্যন্ত। যদিও তাদের বাবা ছাড়া নিজেদের দেখাশোনা করতে সক্ষম তার পরও সাধারণত বাচ্চাদের তদারক একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ আর এ জন্য পরিস্থিতির উপর নজর রাখা বিশেষ ভাবে আবশ্যক।একটা ব্যাপার আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে বাবা মা যখন বাচ্চাদের দেখা শুনা করে তখন খামারের ভিতরের তাপমাত্রা বা জলবায়ু পরিবর্তন হলে সেটা যাতে বেশী পার্থক্য না হয়। মনে রাখা দরকার যে সব বাবা মা ভাল ভাবে বাচ্চা দেখা শুনা করতে ও ডিম ফুটানোর জন্য উপযুক্ত না। অনেক সময় কিছু বাবা মা আছে যারা কিছুদিন ডিম তা দিবার পর ডিম থেকে উঠে পড়ে বা কিছু আছে বাচ্চা ফুটার পর তাদের খাওয়ায় না। সেক্ষেত্রে আপনাকে উপযুক্ত বাবা মার কাছে বাচ্চা বা ডিম চালতে হবে। তা না হলে আপনার লক্ষ্য ব্যাহত হবে। অনেক সময় ডিম ফুটার আগে বা পরে একটু খেয়াল রাখতে হয়। কারণ ডিমের জলিয় বাষ্পের কারনে, নোংরা হবার কারনে বা সাল্মনেল্লা জীবাণু আক্রমনের কারনে ডিমের ভিতরে বা বের হবার সময় বা কিছুদিন পর বাচ্চা মারা যেতে পারে। যদিও শুধু যে সাল্মনেল্লা এর কারণ তা নয়, অনেক সময় নানা ধরনের জীবাণুর ও ব্যাকটেরিয়া বা সংক্রমনের কারনেও মারা যেতে পারে। বিশেষ করে নাভি সংক্রমনে এর মৃত্যুর সংখাই বেশী। অনেক সময় বাচ্চা বাটিতে বাবা মার পায়ে পদ দলিত হয়ে মারা যায়। অনেকেই এ জন্য বাবা মা কেই দায়ী করে।।! আসলে বাচ্চা যখন মারা যায় তার পরই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। অনেকেই মনে করে ডিমের ভিতরে পর তারা শেল থেকে ফোটান পরে বাচ্চা কবুতরের মরে যাওয়াই এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমি বলব তারা জানেন না বলেই এরূপ কথা বলে থাকেন। বাচ্চা জন্মানর পর বাটি ও খাঁচা পরিস্কার করা। বেশী উষ্ণ বা স্যাঁতসেঁতে থাকা। বিশেষ করে যখন পরিষ্কার রাখা না হলে সেখানে জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটে। ফলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়। অনেকেই আছেন যারা বাচ্চা অবস্থা থেকে কবুতর কে নানা ধরনের অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের পরামর্শ দেন। বিশেষ করে আমাদের দেশের অভিজ্ঞ ভেটেনারি ডাক্তারগণ। আর অনেকেই দিয়েও থাকেন। কোন কারণ ছাড়াই যার ফলে বাচ্চা অবস্থা থেকেই একটি কবুতরের ব্রিডিং ক্ষমতা কমে যায়। ফলে বড় হয়ে ডিম জমে না বা ব্রিডিং এর সমস্যা দেখা যায়। মনে রাখতে হবে অ্যান্টিবায়টিক প্রতিরোধের মাধ্যম হতে পারে না। একটা কথা মনে রাখবেন কবুতররের শারীরিক গঠন অন্য প্রাণীদের থেকে একটু আলাদা তাই অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে যেভাবে চিকিৎসা করা হয় সেটার থেকে একটু আলাদা ভাবে চিকিৎসা করার চেষ্টা করুন। তাহলেয় হয়ত আপনার খামার অভীষ্ট লক্ষে পৌছাতে পারবে।

অনেকেই আছেন যারা পূর্ণ বয়স্ক কবুতর কিনতে পছন্দ করেন। তাদের লক্ষ্য থাকে কবুতর কিনবেন তাড়াতাড়ি ডিম দিবে তা থেকে বাচ্চা হবে। আর সেই বাচ্চা বিক্রি করে টাকা উপার্জন করতে থাকবেন। বাস্তবে এটা এত সহজ না। আর এভাবেই একজন নতুন খামারি তার খামারের শুরুতে এ ধরনের সমস্যা দিয়েই তার খামার শুরু করেন। অনেকেই আছেন যে কবুতরের সঙ্গে হাঁস মুরগির তুলনা করে থাকেন। তাদের ধারনা যে হাঁস মুরগির চিকিৎসা ও কবুতরের চিকিৎসা এক, হাঁস মুরগির রোগের ধরন ও কবুতরের রোগের ধরন এক, আর এভাবেই আমাদের দেশে কুসংস্কার ও ভুল চিকিৎসাতেই এই সেক্টর চলছে বছরের পর বছর। পৃথিবীর অনান্য দেশ এ ব্যাপারে নিজেদের কে উন্নত করে ফেললেও আমাদের দেশে এখনও সেই আগের বদ্ধমূল ধারনা নিয়ে বসে আছেন। যা থেকে প্রতিকার পাওয়া বেশ কঠিন। যাদের কাছ থেকে এ সব গাইড লাইন পাওয়ার কথা, তারাই আরও ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে থাকেন। তবে আশার কথা ইদানিং কিছু খামারি এসব ভুল ধারনার নাগপাশ থেকে বের হয়ে এসে সত্যিকার চিন্তাধারাই আসতেছে। আশা করি অচিরেই মানুষ কবুতর সেক্টরের সঠিক জ্ঞান অর্জন করে। কবুতর সেক্টর তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

পরিশেষে, আল্লাহ্‌ বলেন,

“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে।” (সূরা আল বাক্বারাহ:আয়াত-২১)

লেখক : সোহেল রাবি ভাই