কবুতরের পাঁচড়া/কাউর/ একজিমা(Pigeon Scabies)

কবুতরের পাঁচড়া/কাউর/ একজিমা(Pigeon Scabies)

Sarcoptes scabiei মাইট দ্বারা ঘটিত হয় এবং সরাসরি শরীরে আক্রান্ত হয়। এটি অন্য পাখির সাথে যোগাযোগ দ্বারা হয় অথবা বিভিন্ন ফর্ম থেকে আসা একটি সংক্রামিত কবুতরের সাথে ভাল একটা কবুতরের শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমে হতে পারে। এটি এক ধরনের চর্ম রোগ। আর এই রোগ শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা এই তিন মৌসুমে দেখা যায়। আর আবহাওয়ার কম বা বেশিতে রোগের তীব্রতা বেড়ে থাকে। এই রোগ কবুতর কে অসস্থিকর অবস্থার মধ্যে দিন পাত করে থাকে। আর এই রোগ থেকে প্রচণ্ড স্ট্রেস হয় আর ফলে অনেক নতুন রোগের সূত্রপাত হতে পারে।

কারনঃ

১) কবুতরের শরীরের বাইরে মাইট (External parasites) এর আক্রমন।
২) নিয়মিত গোসল না করানোর ফলে শরীরে আতিরিক্ত খুসকি থেকে এই রোগ হতে পারে।
৩) কীটপতঙ্গ/মাছি/মশা ইত্তাদির আক্রমন বা কামড়ের ফলে ঘা থেকে এই রোগ হতে পারে।
৪) অনেক সময় কাঁচা পালক তুলার ফলে,সেই জাইগাটা সঙ্ক্রমন হয়ে এই রোগ হতে পারে।
৫) কোন অ্যালার্জি যুক্ত খাবার যেমনঃ রেজা, ধান, যব কিছু বয়লার গ্রয়ার ইত্যাদি।
৬) নোংরা পানিতে গোসল।

লক্ষণঃ

১) ক্ষত সহ বা ছাড়া চুলকানি বা কামড়।
২) ত্বক প্রায়শই তীব্র চুলকানি এবং ঠোঁট দিয়ে চুলকাতে চুলকাতে ঘা করে ফেলে ও ঘা বড় করে ফেলে। অনেক সময় কাম্রে মাংস পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলে।
৩) খুব ধীরে ধীরে আরোগ্য ।
৪) নির্দিষ্ট এলাকায় উপসর্গের বৃদ্ধি।
৫) রাতে ও আর্দ্র আবহাওয়া উপসর্গের বৃদ্ধি।
৬) পাখার নিচে,গলার নিচে বা ঘাড়ে।
৭) অতিরিক্ত পর ঝরা ও পর ঝরা জায়গায় ঘা এর মত তৈরি হওয়া।
৮) পাখার নিচে অথবা বড় পালকের গোঁড়ায় অথবা লেজের গোঁড়ায় ছোট ছোট চেটচেটে ঘা বা ঘা এর কারনে আকা বাকা পাখার পড় গজান।
৯) ঠোটের গোঁড়ায় ঘা বা চোখের পাশে, কানের কাছে বা পায়ে লাল লাল র‍্যাস এর মত হয় ও কবুতর ঠোঁট দিয়ে চুলকাতে থাকে।
১০) এই রোগটি শুকনো বা ভিজা চ্যাটচেটে ধরনের হতে পারে বা হলুদ রস নির্গত হতে পারে।
১১) যদি ঠোঁট দিয়ে কামড়াতে থাকে তাহলে আক্রান্ত স্থানটি ভাল করে পরিস্কার করে একটা পরিস্কার কাপড় বা ব্যান্দেজ করে দিন।
১২) এই রোগ হলে অনেক সময় কবুতর বেশি ক্লান্ত দেখায়,পাখা ঝুলে যায় ইত্যাদি।

চিকিৎসাঃ

১) পটাস/ফিতকারি/নিম পাতা সিদ্ধ করে কুসুম গরম পানিতে গোসল। (ঠাণ্ডা পানিতে গোসল না দিয়া ভাল।)
২) হোমিও আর্সেনিক ২০০, ২ ফোঁটা করে দিনে ৩-৪ বার।
৩) Crotamiton lotion 10% অথবা Ivermectin ওরাল(মানুষের) ঔষধ ভাল কাজ করে।
৪) কবুতরের গায়ে ছোট লাল পোকার জন্য ইংলিশ শ্যাম্পু ব্যাবহার করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন শ্যাম্পু এর পড় ভাল করে শরীর ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫) নিয়মিত জীবাণু মুক্ত স্প্রে করতে হবে।

সতর্কতাঃ

এই ধরনের রোগ হলে কোন প্রকার কাটা ছেড়া করা বা অস্ত্রপ্রচার করা যাবে না এতে সংক্রমন হয়ে কবুতরের প্রানহানির সম্ভাবনা রয়েছে।

এই রোগ সাধারণত অপরিস্কার খামার ব্যাবস্থাপনার কারনে হয়ে থাকে। তাই এই রোগ প্রতিরোধ করার ভাল পদ্ধতি হল পরিস্কার খামার। আর একটা বিষয় খেয়াল রাখা যেন অকারনে কবুতর খালি হাতে না ধরা। আর যদি ধরতে চান ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলুন। এতে যে শুধু এই রোগ থেকে মুক্ত থাকবে তাই না। যেকোনো রোগ থেকেই নিস্থার পেতে পারেন।

মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই