কবুতরের হিট স্ট্রোক বা তাপ জনিত সমস্যা ( Pigeons Heat Stroke and heat problem)

“হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।“ (সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-১৭৯)

আমি ২০১১ সালে কোন এক জুমাবারে আমাদের খতিব হুজুর জানালেন যে দাড়ি রাখা দায়িমি সুন্নত আর রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, যে দাড়িতে ক্ষুর চালাই, সে যেন আমার বুকে ক্ষুর চালাই।“  কত বড় কথা দুই চোখ পানিতে ভরে গেল তাহলে আমি জিবনে এতদিন কত বড় অন্যায় ও পাপ করেছি ! আর এর জন্য মাফ পাব কিনা জানিনা। আর আমাদের কত বড় স্পর্ধা যে, আমরা এর পরও শুনি না বা শুনেই না শুনার ভান করি ! জেনেও না জানার ভান করি ! যে রাসুল(সাঃ) আমাদের জীবনের থেকেও প্রিয় যার জন্য জীবন দিতে যেকোন মমিন এ মুহূর্ত দেরি করবে না। তার কথার পরও কিভাবে মানুষ দাড়ি কাটে, সেদিন থেকে দাড়ি কাটা বন্ধ করে দিলাম। আজকাল বিভিন্ন নায়কদের দেখে মানুষ দাড়ি রাখতেছে নবীর ভালবাসাতে দাড়ি রাখতে ভাল লাগে না কিন্তু নায়কদের ভালবাসা তাদের দাড়ি রাখতে উৎসাহিত করে। তাও ত ভাল যে কোন না কোন উসিলায় ত তারা দাড়ি রাখছে ! যায় হোক সেদিন বাসে যাচ্ছি আমি চালকের পেছনের সীটে  বসা সামনের জানালা দিয়ে দেখলাম। একদল তাবলীগের কিছু মুস্লুল্লি যাচ্ছেন। সারি ভাবে এর মধ্যে একজন হাত দেখালেন। বাসে উঠার জন্য এর মধ্যে পাসের জন বলে উঠলেন “থামিয়েন না এরা সব সন্ত্রাসী” রাগ চড়ে গেল যদিও আমি তাবলীগ করিনা কিন্তু প্রত্যেক মুসলিম এর সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক ! আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম আপনি এদের কোথাই দেখেছেন সন্ত্রাস করতে তিনি সগর্ভে উত্তর দিলেন আরে আজকাল মিডিয়াতে দেখেন না ! আমি বললাম আপনি কোন মিডিয়ার কথা বলছেন পশ্চিমা মিডিয়া ? লোকটি এবার আমার দিকে ভাল করে তাকাল ! আমি বললাম ভাই এই দাড়ি ওয়ালা লোক ছাড়া আপনার জানাজা হবে না যদি আপনি মুসলিম হয়ে থাকেন সুধু তাই না আপনি তউবা করার জন্য এদেরকেই ডাকতে হবে এমন কি আপনার আমার মরার পর তথাকথিত কোরআন শরিফ যে পাঠ করাবেন লোক দেখান জয় সেটাও এরাই পড়বে কিন্তু কি আশ্চর্য বেচে থাকতে এ সব দাড়িওয়ালা লোকদের কে আমরা কতই না অবজ্ঞার চোখে দেখি!

কিছুদিন আগে আমার কবুতর খামারের জন্য কিছু ভিটামিন ও মিনারেলস ও কিছু ঔষধ আমার বাসা থেকে আমার খামারের লোক দিয়ে পাঠালাম খামারে কিছুক্ষণ পর খামারের ছেলেটি ফোন দিল যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক তাকে ধরেছে। যেহেতু ঘটনাটা আমার বাসার কাছে তাই আমি তাড়াতাড়ি সেখানে উপস্থিত হলাম। গিয়ে দেখলাম যে, ৩ জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক তাকে ঘিরে ধরেছে ও তার কাছ থেকে লাইসেন্স চাচ্ছে। আমি বললাম কিসের লাইসেন্স ? তারা জানালেন যে এই যে ঔষধ নিয়ে যাচ্ছেন তার লাইসেন্স। আমি তাদের জানালাম যে ভাল করে দেখেন যে এগুলো ১-২ আইটেম আর এগুলো বিক্রির জন্য না। এগুলো আমার খামারে ব্যাবহারের জন্য কিন্তু তারা নাছর বান্দা এরই মধ্যে অনেক লোক জমে গেল ! আমি তাদের বললাম, দেখেন প্রথম কথা হল কবুতরের খামার হাস মুরগি গরু ছাগল পালতে ও তার ঔষধ কিনতে লাইসেন্স লাগে না। তিনি আমার সাথে তর্ক জুরে দিলেন কে বল্ল লাগে না অবশ্যই লাগে বলে তার ঊর্ধ্বতন অফিসার কে কল দিলেন। স্যার এসব পালতে আর ঔষধ কিনতে কি লাইসেন্স লাগে না জবাব আসল হা লাগে ফলে তিনি আমার দিকে এবার রাগি ভাবে তাকালেন যেন আমি মারাত্মক কোন অপরাধ করে ফেলেছি। আমাকে থানা তে যেতে হবে আমাকে চালান করে দেয়া হবে ইত্যাদি ইত্যাদি নানা কথা ও ভয় ভিতি দেখাতে লাগলেন।

ইতিমধ্যে আমার বুঝতে বাকি রইল না যে, তিনি আসলে গভর্নর এর স্বাক্ষরিত লাইসেন্স চাচ্ছিলেন। সেটি আশেপাশের দু একজন ইজ্ঞিতও দিলেন। কিন্তু আমি সেই লাইসেন্স দিতে নারাজ, যাই হোক এর মধ্যে আমার সম্বন্ধী যিনি সেই এলাকার একজন নাম করা একটি দলের ও মার্কেট কমিটির সেক্রেটারি। তিনি আসার পর দেখলাম তারা একটু নমনিয় হলেন। এর মধ্যে আমারি এক আত্মীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্ছ পদে কর্মরত তাকে জানালাম, সে বলল তার ব্যাচ নাম্বার ও নাম জানানোর জন্য আমি সেই নাম্বার টা জানানোর সাথে সাথে উপায়ান্তর না দেখে আর তার কাজ হবে না জেনে শিকার হাত ছাড়া হবার হতাশায় সেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আমাকে নানা ভাবে বলেতে লাগলেন যে এজন্য দাড়ি ওয়ালা লোক দেখতে পারে না দাড়ি ওয়ালা লোকদের জন্যই আজ এই অবস্থা ইত্যাদি ইত্যাদি। যায় হোক আমাকে যেতে দিল । আমি বাসাতে আসার পর যারপনাই না মনটা খারাপ হল।

আসলে দাড়ি ওয়ালা লোকদেরই ত যত দোষ হবার কথা।

কেন তারা মানুষ নামাজের জন্য তাগিদ দেয় ?

কেন তারা মানুষ কে মিথ্যা কথা বলতে নিষেধ করে?

কেন তারা কোরআন ও হাদিসের কথা বলে?

কারন এ সব বললে ত সমস্যা

কেন তারা এসব কাজ করে?

তাই হয়ত দাড়ি ওয়ালা লোকদের কে মানুষ এত ঘৃণা করে। কিন্তু কি যায় আসে যারা দাড়ি ওয়ালা তারা ত দুনিয়াবি মতলবে দাড়ি রাখে নাই। তারা আল্লাহ্‌ ও তার রাসুল(সাঃ) কে ভালবেসেই দাড়ি রাখে আর তার জন্য তারা নানা অপমান সজ্য করতেও প্রস্তুত। অনেকেই হয়ত এরই মধ্যেই ভাবছেন ভাই কার মধ্যে কি পান্তা ভাতে ঘি ! কার সাথে কি মিক্স আপ করতেছেন ?

শরীর সাধারণত বিপাক ক্রিয়ার ফলে তাপ তৈরি করে এবং সাধারণত চামড়ার মাধ্যমে বা ঘাম বাষ্পীভবন দ্বারা তাপ হয়। এর ফলে যদি বিকিরণ দ্বারা তাপ অপচয় করতে সক্ষম হয় না। সূর্যের ফলে চরম তাপ বা যে কোন উচ্চ আর্দ্রতা বা শারীরিক পরিশ্রম শরীরের তাপ কখনও কখনও বেড়ে উচ্চতর হয়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে নিয়ন্ত্রন বা অপচয় করতে সক্ষম নাও হতে পারে। ফলে কবুতরের হিট স্ট্রোক (Pigeons Heat Stroke) ঘটে যেতে পারে। শরীর যদি যথেষ্ট দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটায়, যা বিভিন্ন ভাবে তাপ অপচয় বা ঘামের মাধ্যমে বের করতে সক্ষম না হতে পারে তাহলে হিট স্ট্রোক বা তাপ জনিত সমস্যাই ভুগতে পারে। শরীরের প্রক্রিয়ায় খুব গরম বা আর্দ্র পরিবেশ বা তীব্র শারীরিক কার্যকলাপ দ্বারা আবিষ্ট হয়ে বাড়তি তাপ নিজেই পরিত্রাণ পেতে পারে না তখন কবুতরের হিট স্ট্রোক  ঘটতে পারে। প্রাণীরা বিভিন্ন ভাবে তাদের শরীরের তাপ বের করে দেয়।

যেমনঃ হা করে শ্বাস নিবার মাধ্যমে বা জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে বা শরিরে মুখ দিয়ে পানি ছিটিয়ে ইত্যাদি।

এগুলো করতে ব্যর্থ হলে বা শরীরে পানি শূন্যতা ঘটলে বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে বা বিভিন্ন রোগে ভুগে বা শরীরের প্যারাসাইটের অতি মাত্রায় সংক্রমণে ফলে স্ট্রেস হলে।

নিয়মিত গোসলের ব্যাবস্থা না করলে।

শরীরের তাপ বৃদ্ধি পেয়ে এ ধরনের এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

অনেকেই ধারনা পোষণ করেন যে কবুতরের ঘাম হয় না। আসলে এ কথাটি সঠিক নয়। দীর্ঘদিন কবুতরের গোসল না দিলে তাদের শরীর থেকে উৎকট এক ধরনের হাস মুরগির মত গন্ধ বের হয়। অনেকেই কবুতর কে গোসল না দিয়ে স্প্রে করেন থাকেন। সেক্ষেত্রে উনারা মনে করেন এটিই যথেষ্ট কিন্তু আসল তা ঠিক না। আবার একই অজুহাত দেন যে তার খামারে গোসল করান যায় না বা ব্যবস্থা নাই। কিন্তু আমি তাহলে তাদের বলব আপনি আপনার সেন্স ব্যাবহার করেন নাই তাই হয়ত এ রূপ অজুহাত দিতেছেন। স্প্রে আর গোসল এক না। এথেকে একই সুবিধা পাওয়া যাবে না।

হিট স্ট্রোক এর লক্ষণঃ

১) কবুতরের পাখা দুপাশে ঝুলে যাওয়া আর এটাই হল প্রথম সতর্কবার্তা ।
২) মুখ ও ঠোঁট ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া যদিও সব ক্ষেত্রে মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া সি ধরনের সমস্যা নির্দেশ করেনা । মনে রাখবেন এটা বিভিন্ন রোগের কারনেও হতে পারে। আপনার আপনি যথাযথ উপসর্গের মাধ্যমে অসুস্থতা বা dehydration বা হিট স্ট্রোক থেকে আলাদা করতে পারেন।
৩) শ্বাস-প্রশ্বাস ভারী হয়ে ওঠে।
৪) হৃদ স্পন্দনের হার বেড়ে যাবে।
৫) খাওয়া দাওা কমে যাবে এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
৬) পানি পর্যন্ত খেতে দেখা যেতে নাও পারে।
৭) ডায়রিয়া দেখা দিবে।
৮) যদি আপনি কবুতরের গায়ের চামড়া ধরে টানেন তাহলে অনেক ঢিলা মনে হবে।
৯) অল্পদিন ডায়রিয়ার পরে শরীরের অক্ষমতা প্রকাশ পাবে।
১০) পাখির ঝিমানি ভাব বা লোম ফুলিয়ে বসে থাকবে।
১১) শরীর নড়বড়ে বা এমনকি সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হয়ে পড়বে ।
১২) যদি শরীরের অধিক তাপ সৃষ্টির ফলে কবুতরের পানিশূন্যতা (dehydration) হয় বেশি তাহলে পাখির খিঁচুনি হতে পারে।
১৩) কবুতর বমি করতে পারে।
১৪) এ ব্যপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে হটাত মৃত্যু ঘটে।
১৫) ঠাণ্ডা ভাব বা সর্দি গর্মি বা পাখা/পা আংশিক সাময়িক প্যারালাইসিস হতে পারে।
১৬) আংশিক বা সম্পুরন চেতনাশূন্য হতে পারে।
১৭) শরীরের তাপ হটাত বেড়ে বা কমে যেতে পারে। এর ফলে কবুতর উল্টে পরে ঝটপটানি করতে পারে।
১৮) হা করে শ্বাস নিবে ও নিচের অংশ টি উঠানামা করবে যেমন গরমে মুরগি যেমন করে শ্বাস নেয় ঠিক তেমন করে।
১৯) নাকে ও চোখে পানি থাকবে (ঘর ঘর করতে পারে বা নাও পারে কিন্তু মুখের ভিতরে কোন প্রকার সাদা বা হলুদ আবরন থাকবে না।) পায়খানা স্বাভাবিক থাকবে অর্থাৎ সবুজ সাদা বা পাতলা সবুজ বা পাতলা খয়রি রঙের বা হালকা সবুজ সাদা ইত্যাদি।
২০) কবুতর টলমল করে পরে যেতে পারে বা তাদের শারীরিক চলাফেরা কমিয়ে দিতে পারে।

প্রতিরোধ ও প্রতিকারঃ

১) অ্যাঁলভিরা হল সবচেয়ে ভাল প্রাকৃতিক রোগ নিরাময়ক উপাদান। এটি পানি শূন্যতা ও তাপ জনিত সমস্যা থেকে তড়িৎ মুক্তি দেয়। একটি অ্যাঁলভিরার পাতা ছিলে এর ভিতরের জেল ব্লেন্ড করে ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে দেয়া যেতে পারে মাসে ৩-৪ দিন। এর সাথে তাল মিস্রি মিক্স করে দিলে আরও ভাল উপকার পাওয়া যায়। অ্যাঁলভিরা প্রকৃতি প্রদত্ত এক্তি নিয়ামত এটিতে সব ধরনের উপাসান বিদ্যমান কেউ যদি মনে করেন যে তার খামারে অন্য কোন ভিটামিন ও মিনারেলস দিবেন না অ্যাঁলভিরা ছাড়া সেটা তার জন্য যথেষ্ট হবে। এটি একাধারে রোগ নিরাময়ক অন্য দিকে ভিটামিন ও মিনারেলস এর উৎস।
২) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আরেকটি ভাল উপাদান কবুতরের শরীর কে ঠাণ্ডা ও ইমিউন সিস্টেম কে সবল রাখতে। ১ মিলি অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ১ লিটার পানিতে মিক্স করে মাসে ১-২ দিন দিয়া যেতে পারে সাধারন খাবার পানি হিসাবে।
৩) পুদিনা পাতা বেঁটে ১-২ চামচ পুদিনা পাতা+ ১ টি লেবুর রস ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ছেকে নিয়ে সাধারন খাবার পানি হিসাবে দেয়া যেতে পারে মাসে ২-৩ দিন। এর সাথে তাল মিস্রি মিক্স করে দিতে পারেন।
৪) ধনে পাতা বেঁটে ১-২ চামচ পুদিনা পাতা+ ১ টি লেবুর রস ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ছেকে নিয়ে সাধারন খাবার পানি হিসাবে দেয়া যেতে পারে মাসে ২-৩ দিন।
৫) ১ টি লেবুর রস+২ চামচ লবন= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ছেকে নিয়ে সাধারন খাবার পানি হিসাবে দিয়া যেতে পারে মাসে ২-৩ দিন। এর সাথে তাল মিস্রি মিক্স করে দিতে পারেন।
৬) কমলা লেবুর জুস পানির সাতে মিক্স করে দিতে পারেন এতে ভিতামিন সি এর অভাব পুরন হবে এর সাথে সাথে তাল মিস্রি মিক্স করে দিতে পারেন।
৭) হামদারদ এর রূহ আফজা ২-৩ চামচ ১ লিটার পানিতে মিক্স করে দিতে পারেন। এর সাথে তাল মিস্রি মিক্স করেও দিতে পারেন।
৮) হামদারদ এর কুলজাম ১-২ চামচ ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে দিতে পারেন মাসে ১ দিন।
৯) আপনি যদি নিশ্চিত থাকেন যে আপনার কবুতর হিট স্ট্রোক বা এই ধরনের সমস্যাই আক্রান্ত তাহলে অনতি বিলম্বে গলা পর্যন্ত ধরে ভাল করে গোসল করানোর ব্যাবস্থা করবেন। যদিও সাধারন ভাবে তাদের কে পানি দিয়ে সপ্তাহে ২-৩ দিন গোসলের পানি সরবরাহ করতে পারেলে ভাল যদি তা না পারেন কমপক্ষে ২ দিন গোসলের ব্যাবস্থা করবেন। কিছু কবুতর আছে যারা নিজে গোসল করতে চাই না। তাদের ধরে গোসলের ব্যাবস্থা করবেন।
১০) খামারে নিয়মিত বাতাস চলাচলের ব্যাবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে বাতাস প্রস্থান ফ্যান ও সিলিং ফ্যান এর ব্যাবস্থা করতে হবে।
১১) কবুতরের গ্রিট সরবরাহ করতে হবে নিয়মিত।
১২) গরমে কবুতর পাতলা পায়খানা করে থাকে। আর অনেকেই আছেন যারা এ ধরনের পাতলা পায়খানা দেখে নানা ধরনের অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের পরামর্শ দেন যা আদৌ ঠিক না। এতে এদের শরীর কুলিং সিস্টেম এ বাধা প্রাপ্ত হয়। অ্যান্টিবডি যা রোগ প্রতিরোধ করে সেটি নষ্ট হয়ে যায়। আপনি যদি মনে করেন যে আপনার কবুতর বেশি পাতলা পায়খানা করছে তাহলে হামদারদ এর ডিসনী নামে ট্যাবলেট ১ টা করে দিনে ৩ বার ৩ দিন দিতে পারেন। সাধারন ভেটেনারি স্যালাইন বা রাইস স্যালাইন দিতে পারেন পানু শূন্যতা রোধ করার জন্য যাতে করে আপনি অন্য চিকিৎসা করার সুযোগ পান।
১৩) এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত জানতে পানি শূন্যতা ও স্ট্রেস নামে পোস্ট দুটি পড়তে পারেন।
১৪) এই সময় কবুতর কে জীবাণু মুক্ত স্প্রে বা সাধারন পানি স্প্রে করবেন প্রতিদিন, খামার ও ট্রে পরিস্কার করবেন পারলে প্রতিদিন না হলে ২ দিন পর পর, কারন এটি খুবই জরুরি।
১৫) হোমিও Belodona 30, ১ সিসি/মিলি করে ১ লিটার পানিতে মিক্স করে মাসে ১-২ দিন দিতে পারেন। এটি এই ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে।
১৬) আনারস জুস বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, গ্লুকজ হিট স্ট্রোক রোধে ভাল ভুমিকা রাখে।
১৭) এই সময় ভাল প্রবায়টিক প্রয়োগ করতে পারেন বা লাল বা চা টক দৈ, মেথি ইত্যাদি এ সময় ভাল উপকারি প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে কাজ করে।

সতর্কতাঃ

১) গরমে ভিটামিন k,ad3,Calcium ও D বেশি দিবার চেষ্টা করবেন না ডিম পাড়ানোর জন্য কারন এই জাতীয় ভিটামিন গুলো শরীরের তাপ বৃদ্ধি করে ফলে কবুতরের হিট স্ট্রোক  হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
২) পাতলা পায়খানা হলে অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকুন। কারন অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ করলে বেশি পানি পান করাতে হয়। কিন্তু যেহেতু আগেই এদের শরীরে পানির ঘাটতি থাকে তাই এতে এদের প্রান ঘাতিও হতে পারে।
৩) সাধারন ঠাণ্ডা তে কোন প্রকার অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ না করা কারন এ ক্ষেত্রে এর বিপরিত ফ্ল বয়ে আনতে পারে। বিসেস করে কসমিক্স প্লাস এর মত ঔষধ এক্ষেত্রে প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে।
এখন খামারি বা কবুতর পালকের যত বেশি কমন সেন্স থাকে তিনি তত ভাল কবুতর পালক। অনেকেই মনে করে থাকেন যে ঠাণ্ডাতে কবুতরের সমস্যা হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ঠাণ্ডাতে একটি কবুতরের যত না সমস্যা হয় তার থেকেও দ্বিগুণ সমস্যা হয় গরমে, আর এটি মানুষের ক্ষেত্রেও সত্য কততুকু যারা ভুগেন তারাই জানেন।

আমরা নিজেরা যখন ঠাণ্ডা বা ডায়রিয়াতে ভুগি তখন কিন্তু আমরা অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করি না। কিন্তু কবুতর ও পাখির ক্ষেত্রে সেটা অবলীলায় করে থাকি। কিন্তু কেন?

এর সঠিক উত্তর কেউ মনে হয় দিতে পারবে না। অধিকাংশ পাখি ও কবুতর লিভার ও কিডনি সমস্যাই ভুগে থাকে আর এর অন্যতম কারণ পানি ও অতিরিক্ত ঔষধের ব্যাবহার। আমারা যদি একটু খেয়াল রাখি তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ রাখতে পারি আমাদের খামার।

পরিশেষে, মনের গহিনে জমে থাকে কিছু পঞ্জিভুত ক্ষোভ হটাত করে জেগে উঠল আজ ! হয়ত সে কথা আজ নয় অন্য একদিন আপানাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব, সেই সাথে মনে পরে গেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার কিছু অংশ …!

“আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি , এই ছিল মোর ঘটে —
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ , আমি আজ চোর বটে !”

লেখক : সোহেল রাবি ভাই